top of page
Image by Jaredd Craig
Book a place >
BOOKCAFEbanner.jpg
Cup of Coffee

বুকক্যাফে ও শিকড়

 

বুক ক্যাফে একটি সমৃদ্ধশালী সাহিত্যের প্লাটফর্ম, যার ইতিহাস শত বছর পুরনো।  গ্রীক সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত সিম্পোশন হিসাবে যেটা ১৮ শতকের দিকে প্রাচীন গ্রীসে তার প্ৰৱৰ্তন। সিম্পোশন হচ্ছে অনেকটা অভিজাত লোকদের ভোজ সভার পরে আড্ডার মত, যেখানে শিল্প, দর্শন, সাহিত্য এবং রাজনীতি নিয়ে আড্ডা দেয়া হতো। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তার ব্যাপ্তি ও সামাজিক পর্যায়ে উন্নীত হতে থাকে। আর তারই  ধারাবাহিকতায় আজকের বুক ক্যাফে। বুক ক্যাফেকে কেন্দ্র করে সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে গড়ে উঠতো আড্ডা, সেই চল্লিশ ও পঞ্চাশ দশককে একটি নতুন প্রজন্ম আমেরিকার মূলধারার সামাজিক জীবনব্যবস্থা এবং লেখালেখির প্রচলিত নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, তাদেরকে বলা হয় বিটনিক কবি বা তারা বিট পোয়েটস নামে পরিচিতি লাভ করে। সে সময়ের তরুণ কবি সাহিত্যিক তাদের শৈল্পিক চিন্তার ব্যাপকতা নিয়ে এরকম ক্যাফেগুলোতে আড্ডায় মেতে থাকতো। এমনকি ষাটের দশকে পশ্চিমদেশগুলোতে লোকসংগীতের শুরু থেকে শৈল্পিক আত্মপ্রকাশে কফিহাউসগুলিতে সাধারণত সন্ধ্যায় কবি, শিল্পী ও গীতিকারদের উপস্থিতিতে গান কবিতার আয়োজনে মুখর হয়ে উঠতো।

লন্ডন শহরের সোহো কফি হাউসে কীভাবে একটি নতুন বামদের জন্ম দিয়েছিলো সেটা আজ ইতিহাস। যেখানে পঞ্চাশের দশকে পার্টিসান ক্যাফে নামে পরিচিত সেই ক্যাফে ছিল  পাল্টা সংস্কৃতির নেতাদের আশ্রয়স্থল। এটি একসময় র‍্যাডিক্যাল আলোচনার আবাসস্থল ছিল, এক কাপ মেডিকোর ট্রেডমার্কের কফি সমাজতান্ত্রিক বক্তৃতার একটি পরিপূরক সাইড অর্ডার হিসাবে কাজ করেছে ।  বিশেষ করে পার্টিসান পার্টির নাম করনে তারা  মার্শাল টিটোর পক্ষে কাজ করছেন। লন্ডনের পার্টিসান কফি হাউসের সোহো ভেন্যু যা ব্রিটেনের অনেক নেতৃস্থানীয় বামপন্থী আন্দোলন এবং প্রচারাভিযান গোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছিলো।

যদিও ক্যাফে বলতে কফিহাউসকেই আমরা ধরে নেই, কিন্তু নানা দেশে সেই যুগযুগ ধরে ক্যাফেগুলো ভিন্ন ভিন্নভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। একটি কফিহাউস কখনো বার বা রেস্তোরাঁর বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে উঠলেও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক কফিহাউসে এবং পশ্চিমা বিশ্বের পশ্চিম এশীয় অভিবাসী এলাকাগুলোতে শিশা বা আরবিতে লেভানটাইন এবং গ্রীক এবং তুর্কি ভাষায় নারগিল অর্থাৎ হুক্কার মাধ্যমে ধূমপান করা স্বাদযুক্ত তামাক পরিবেশন করা হয়ে থাকে।

আমাদের দেশে কফিহাউস বলতে আমরা ফিরে যাই সেই আড্ডায়, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা এবং ১৯৮৩ সালে মান্নাদে'র কণ্ঠের বিখ্যাত গান; “কফি হাউসের সেই আড্ডাটা
আজ আর নেই....”

প্রায় চার দশক ধরে সেই বন্ধুরা যাদের নামগুলো আমাদের কাছে এবং বাংলার সাংস্কৃতিক জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। যদিও অনেকেরই কলকাতার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, প্রেসিডেন্সি কলেজের বিপরীতে কফি হাউসটা দেখার বা আড্ডার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। যেটি ভারতীয় কফি বোর্ড কর্তৃক ১৯৪২ সালে 'ইন্ডিয়ান কফি হাউস' নামে প্রতিষ্ঠিত হয় তবে ১৯৪৭ সালে 'কফি হাউস' নামে পুনঃ-নামকরণ করা হয়। যে কফি হাউসকে কেন্দ্র করে কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক এবং শিল্প জগতের মানুষের আড্ডার মিলনস্থল হিসাবে পরিচিতি পায়। তাই আমাদের কাছে কফি হাউসটি একান্তই গানটিকে কেন্দ্র করে বিমোহন স্মৃতিচারণ আছে, হয়ত সেখানকার আড্ডা আমাদের অনুভূতিকে নাড়া দেয় আমরা বারবার কফি হাউস এবং তার আড্ডার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেলিত হয়ে উঠি..। মুলকথা সেই কফি হাউটি বুক ক্যাফের প্রিয় আড্ডার আদলটাকে ধারণ করে আছে।

 

যদিও গত এক দশকে বিশেষভাবে প্রচলিত কফি শপগুলো যা অন্যান্য প্রতিযোগী খাবারের প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে সারা পৃথিবীজুড়ে। যেমন রেস্তোরাঁ, পাব এবং ফাস্ট-ফুড চেইনের সাথে সাথে কফি শপ একটি উন্নত ব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নেই। তবে বুক ক্যাফে বলতে আমাদের দেশের জন্য একান্তই নতুন একটি  বিষয়, আমরা তার সাথে এখনো তুলনামূলক ভাবে পরিচিত হতে পারিনি।

একটি বুক ক্যাফে বা সাহিত্য ক্যাফে হল এক ধরনের বই বা গ্রন্থ সম্পৃক্ত ক্যাফে, যেখানে লোকজন সবাই বই পড়তে বা কিনতে পারে, এবং খাবার, পানীয় সহ আড্ডা দিতে পারে। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, সেগুলি মূলত সামাজিক যোগাযোগের কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে এবং শিল্প সাহিত্যের মিলন কেন্দ্র হয়ে ওঠে, যা পৃথকভাবে বা আনুষ্ঠানিকভাবে হোক না কেন যেখানে একে অপরকে বিনোদন দেওয়ার বা সময় কাটানোর জায়গা করে দেয়। ইদানীং বুক ক্যাফেতে বইয়ের পাশাপাশি Wi-Fi এর জনপ্রিয়তার কারণে ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট ইন্টারনেট এক্সেসের মাধ্যমে বিনোদনের বিষয়টি তরুণ তরুণীদের কাছে আরেকটু সামনে এগিয়ে এসেছে। যেখানে অতীত ও আধুনিক শিল্পসম্মত মাধ্যমের একটি নান্দনিক জায়গা হয়ে উঠেছে। বুক ক্যাফেকে কেন্দ্র করে তার নিয়মিত সদস্যদের জন্য একটি অনানুষ্ঠানিক ক্লাব হিসাবে গড়ে উঠতে পারে।

 

শিকড় বুকক্যাফে এবং পাবলিশিং হাউস:

আমরা শিকড় বুকক্যাফেকে স্বল্প পরিসরে হলেও তার আদলকে ভিন্ন মাত্রায়,  একান্তই বাঙালিয়ানায় সাজানোর চেষ্টা করছি। যদিও ঢাকায় বুকক্যাফের বিষয়টি শিল্পপাড়ার মানুষের কাছে নতুন কোন চমক নয় কিন্তু আমরা যথার্থভাবে সাহিত্য সংস্কৃতির মৌলিক বিষয়গুলোকে সামনে রেখে গড়ে তুলতে চাই একটি ব্যতিক্রমী চিত্তাকর্ষক প্ৰতিষ্ঠান হিসাবে। যেন সাহিত্যের বিকাশে শিল্পসম্মত একটি বিনোদন কেন্দ্র।  

 

শিকড় তার যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৯৮ সালে শিল্প-সাহিত্যের কাগজ হিসাবে, যার শিল্পমানগত আবেদন ছিল বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকা সহ নানা জায়গার কবি সাহিত্যিক ও পাঠকের কাছে। সাহিত্য ক্ষেত্রে তার অবস্থান ছিলো যথার্থ পরিপূরক।

আজ দীর্ঘ দুই যুগ পর সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে শিকড় তার যাত্রাপথে নতুন  মাত্রা যোগ করতে সক্ষম হলো। আমাদের সুপ্রিয় কবি, সাহিত্যিক, শিল্প ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বন্ধু পরিজনদের সেবায় আমাদের শিকড় বুকক্যাফে ও পাবলিশিং হাউস।

 

আমরা চেষ্টা করবো উদারতার সাথে সাথে মৌলিক বিষয়ে আপনাদের পাশে থাকতে, আপনাদের সেবাদানে কোনরকম কার্পণ্য না করতে। শিকড় বুকক্যাফের আড্ডায় আপনাদের সবাইকে সুস্বাগতম। আপনার প্রকাশনার সকল কাজের জন্য আমাদের প্রচেষ্টায় থাকবে সর্বাত্মক নান্দনিকতার অঙ্গিকার। আমরা আপনার সহযোগিতা কামনা করি, আপনার প্রসারিত হাত শিকড়ের যাত্রাকে আরো প্রতিশ্রুত করুক। শিকড় মানে আমাদের ঐতিহ্যের অহংকার। সাহিত্য ও সংস্কৃতির পথ ধরে আমরা হেঁটে যেতে চাই অনেকদূর।

শিকড় আপনার,  শিকড় শিল্পোন্নত মানুষের প্রাণের প্লাটফর্ম।  শিকড়ের সাথেই থাকুন। আমরা আছি আপনাদের সেবায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জয় হোক সাহিত্য ও শিল্পকৰ্মী মানুষের জয়।

............................

ফারুক আহমেদ রনি

Book or Order your Foods

We will drop at your door

 

Order Details

Thanks for ordering!

BOOKCAFELOGO.jpg
signboard.jpg

Contact Us
Tel: 01746100299

Visit us
Shikor BookCafe and Publications
263 Mahi-Hasan Tower
1st Floor, Room B
Malibagh
Dhaka 1217

 

bottom of page